দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/ কর্মচারীরা তাদের ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) এর মধ্যে বিদ্যমান সংকট নিরসনের জন্য গত ২১ মে, ২০২৫ তারিখ থেকে শুরু হয়ে অদ্যাবধি আন্দোলন চলমান আছে। বিগত ৭ দিন অতিবাহিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সংকট সমাধানে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা অনুযায়ী জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে ২৮ মে,২০২৫ থেকে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।তারই অংশ হিসেবে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ কর্মবিরতি পালন করেন।গতকাল ২৮ মে বুধবার বিকাল ৪:০০ ঘটিকায় সমিতির সদর দপ্তরে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সকল অফিসের কর্মকর্তা /কর্মচারীদের উপস্থিতিতে (ঢাকা শহিদ মিনারে অবস্থানরত কর্মকর্তা/ কর্মচারী ব্যতীত) কর্মবিরতি পালন করা হয়। এসময় রূপদিয়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম (ও এন্ড এম) মনিরুল ইসলাম বলেন আমরা সকলেই স্ব-প্রণোদিত হয়ে আজকে এই কর্মবিরতিতে অংশ গ্রহণ করতে এসেছি কারো প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আসিনি। তার এই কথায় সকলই সহমত পোষণ করেন। তিনি আরো বলেন আমরা যারা স্ব স্ব অফিসে অবস্থান করছি আমাদের মন পড়ে আছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। আমার যেসকল সহকর্মীরা রোদ ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনের পর দিন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পড়ে আছে তাদের সাথে আমরা বেঈমানী করতে পারিনা তাহলে আমরা মোনাফেক হয়ে যাবো। আমরা কেউ মোনাফেক হয়ে মরতে চাই না আমরা ঈমানের সহিত মরতে চাই।কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে যারা অবস্থান করছেন তাদের সাথে আমরা যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সকল স্তরের কর্মকর্তা/ কর্মচারীগণ একাত্বতা ও সংহতি পোষণ করছি।প্রয়োজনে আমরা সকলেই ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে স্ব-শরীরে উপস্থিত হবো ইনশাআল্লাহ। তার এই বক্তব্যের সাথে সকলই সহমত পোষণ করেন। এর আগে গত ২৬ মে আরইবি চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ও সদর দপ্তরের বিলিং সুপারভাইজার প্রতিবাদলিপি সংবলিত ব্যানার সমিতির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আপলোড করেন।গতকাল কর্মবিরতি পালন করার সময় ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন।পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কারে চলমান আন্দোলনের সাথে ইতিমধ্যে সংহতি প্রকাশ করেছেন।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি),বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, এনসিপি শ্রমিক উইংস, এনসিপি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী উইংস, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জুলাই ঐক্য(ঢাবি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, সার্বভৌমত্ব আন্দোলন,রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, আইডিইবি, এফডিইবি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম ফোরাম (অবঃ) সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ও সুধীজন। এদিকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলনের ৯ম দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সংকট সমাধানে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বরং সম্পূর্ণ
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অধিকার আদায়ের হাজার হাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জনবলকে অস্থিতিশীল সৃষ্টিকারী বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিগত ৮ দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে বিদ্যুৎ কর্মীরা মানবেতর জীবন পার করার পরও সরকারের কোন ভ্রূক্ষেপ কিংবা সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়া অত্যন্ত বেদনার; ২৪ এর অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের নিকট থেকে যা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।এই আন্দোলন শুধু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের জন্য নয়; এই আন্দোলন পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ জনপদের ১৪ কোটি মানুষের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিতের জন্য একটি আধুনিক, মানসম্মত ও টেকসই বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম গড়ার আন্দোলন।
সরকারের পক্ষ থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের ন্যায্য দাবি আদায়ের কোন কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় আগামী ২৯ মে, ২০২৫ রোজ বৃহস্পতিবার সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নি¤œবর্ণিত কর্মসূচি পালন করবেঃ
১। শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি জরুরী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে আগামীকাল সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
২। আগামী ২৪ ঘন্টার ভিতর আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ না হলে সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সমূহের অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইলসমূহ সমিতির সদর দপ্তরে জমা প্রদান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
৩। বর্তমানে বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা অথবা বল প্রয়োগ করে দমন পীড়ন কিংবা পূর্বের ন্যায় মিথ্যা মামলার মাধ্যমে হয়রানীর অপচেষ্টা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে সমিতির ৪৫ হাজার কর্মী শহীদ মিনার অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবে।
৪। বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক আমাদের সাথে কোনরূপ আলোচনা না করে একপাক্ষিকভাবে মনগড়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমরা কোনরূপ জনদুর্ভোগ কিংবা সেবা বিঘিœত করে কোন কর্মসূচি করতে চাই না। আমরা রাস্তা ব্লকেড করে, সেবা বন্ধ করে কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে কোন কর্মসূচি করি নাই। নিজেরা মানবেতর জীবন যাপন করে, রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতে শহীদ মিনারে অবস্থান করে নিজেদের যৌক্তিক দাবী জানানোর চেষ্টা করছি। বিদ্যমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আবারো মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মহোদয়ের আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
https://slotbet.online/