• মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
দেবহাটায় রাইট টু গ্রো প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা ঝিকরগাছায় দিনব্যাপী কাপ কার্নিভাল অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় প্রশাসনের সাথে পরিষেবায় অভিগম্যতা বিষয়ক আলোচনা সভা সাতক্ষীরা জেলা জাতীয় পার্টির জরুরী সভা গত ১০ মাসেও খুলনার কোন শীর্ষ ডেভিল গ্রেফতার হয়নি আশাশুনি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল মাদ্রাসা ছাত্রের জীবন যশোরে হেরোইনের মামলায় বেনাপোলের মাদক ব্যবসায়ী বাবু ও জাহিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড বেসিক ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা যশোরের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে মামলা

কপিলমুনির সাহিত্য সাধক জি এম এমদাদ

যশোর বার্তা অনলাইন ডেস্কঃ / ২০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
সাহিত্য সাধক জি এম এমদাদ

কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধি

 

ছোট বেলা থেকেই শান্ত, সদালাপী, মিষ্টভাষী, লেখালেখিতে যার অবাধ বিচরণ, বই পড়া যার নেশা, বলাচলে নিভৃত পল্লীতে জন্ম নিয়েও যিনি সাহিত্য সাধনায় মগ্ন, একে একে লিখেছেন ৫ টি বই, আর কয়েকটি রয়েছে প্রকাশের অপেক্ষায় তিনি একই সাথে কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার, অভিনেতা ও শিক্ষক জি এম এমদাদ।

খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার অজপাড়াগাঁ রামনগর গ্রামে ১৯৬১ সালের ১৪ জুলাই এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন এমদাদ। পিতা জি এম এরফান আলী ছিলেন সরকারী হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট। মাতা আমেনা আলী গৃহিনী। পিতা মাতার ৩ সন্তানের মধ্যে এমদাদ বড়। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় কপিলমুনি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এস এস সি, কপিলমুনি কলেজ থেকে এইচ এস সি ও পরবর্তীতে বাংলায় এম এ ডিগ্রী লাভ করেন।

এমদাদ স্কুল জীবন থেকে নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পা রাখেন। পরে নাটকের পাশাপাশি গান অবৃতিও তাঁকে পেয়ে বসে। কলেজ জীবন থেকে কৌতুক অভিনয় শুরু করেন। এলাকায় তাঁর কৌতুক বেশ সাড়া ফেলে। কপিলমুনি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে প্রথমে গ্রামীণ ব্যাংক, পরে কপিলমুনি জে এ ফাজেল ডিগ্রী মাদ্রাসায় গ্রন্থাগারিক হিসেবে যোগ দান করেন। গান লেখালেখি শুরু তাঁর ছাত্রাবস্থায়, বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত গীতিকার হিসেবে স্বীকৃতি পান ২০০৫ সালে। খুলনা বেতারের একজন কথক ও আবৃতিকার তিনি।

এখানেই শেষ নয়, তিনি সাংবাদিকতার মতো মহান ঝুঁকিপূর্ণ পেশায়ও নিজেকে সপে দিয়েছিলেন। আঞ্চলিক কল্যাণ, স্ফুলিঙ্গ, জাতীয় দৈনিক নয়া দিগন্ত, মুক্ত কন্ঠ ও ইনকিলাবে সাংবাদিকতা করেছেন। আর তাঁর এই সাংবাদিকতার সূত্র ধরে ২০০৪ সালে প্রকাশ পায় পাইকগাছার মাটি ও মানুষ নিয়ে লেখা ‘সাদা সোনার রাজ্য’ গ্রন্থ, স্বাধীণতা দিবসের উপর নাটক ‘ফিরে দেখা’, ২০০৮ সালে ‘পাইকগাছা পাসওয়ার্ড’, ২০১৫ সালে নবীন লেখকদের জন্য গ্রন্থ ‘লেখালেখির হাতে খড়ি’, একজন নতুন লেখক কিভাবে লেখালেখি শুরু করবেন, লেখক হতে গেলে কি ধরনের বাধা বিপত্তি আসতে পারে এমন সব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে গ্রন্থটিতে।

 

২০১৬ সালের ১ম দিকে বিশিষ্ট সমাজ সেবক কপিলমুনির আধুনিক রুপকার স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুকে নিয়ে একটি পূর্নাঙ্গ জীবনী গ্রন্থ লিখেছেন যা অনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচনের অপেক্ষায় রয়েছে। বাস্তবতাটা বলতে গেলে বইগুলো লিখেই খ্যান্ত নন জি এম এমদাদ, তিনি বৃক্ষপ্রেমী মেহের মুসল্লী, হযরত জাফর আউলিয়া (র) কে নিয়ে দুটি বই লিখেছেন যা এখন ছাপার অপেক্ষায়। ইতোপূর্বে কয়েকটি স্মরণীকা ও বই তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশ পেয়েছে। তিনি প্রায় ১ যুগ ধরে কপিলমুনি থেকে ‘দীপ্ত বাংলা’ নামে একটি সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনা করে আসছেন। এলাকাবাসী বললেন, তিনি লেখালেখি ও শিক্ষকতার পাশাপাশি সামজিক সংগঠন-প্রতিষ্ঠানে জড়িত থেকে সমাজের সেবা করার মানষিকতা দেখিয়েছেন যা বলাবাহুল্য। লেখকের নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত রামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কে আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও রামনগর কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোগক্তা ছিলেন। খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কপিলমুনি এলাকার পরিচালক হিসেবে ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি অবসর সময় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে দুঃস্থদের সেবা করে চলেছেন। সাহিত্য সাধনায় বিশেষ অবদান রাখায় গাংচিল ও বাসপ পদক পেয়েছেন এমদাদ।

 

ব্যক্তি জীবনে লেখক এমদাদ অত্যন্ত সাদসিধে একটা মানুষ। স্ত্রী আঞ্জুমানারা’কে নিয়ে স্বপ্ন-সুখের সংসার তাঁর। তাঁদের ২ ছেলে, সৈকতইমরান হাইকোর্টের আইজীবি, আর অন্যজন আসিফ কামরান শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের
স্নাতকে অধ্যায়নরত।

অজপাড়ায় সাহিত্য সাধনায় মগ্ন এই গুনি লেখকের কাছে লেখালেখির বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর সাধনার টেবিলে আবেগে যেন নুয়ে পড়েন তিনি। একটু আবেগ কাটিয়ে তাই ছলছল চোখে বলেন, লেখালেখি দিয়েই জীবনটা শুরু, সিংহভাগ সময় পার করছি এ জগতে, তাই লেখালেখিতে থেকেই জীবনের যবনিকা ঘটাতে চাই।

তিনি আরো বলেন, পাইকগাছার মাটি ও মানুষকে আমি বড় ভালবাসি, তাই এখানকার আঞ্চলিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্য। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে চাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরো সংবাদ
https://slotbet.online/