কেসিসি প্রশাসক ফিরোজ সরকার বলেছেন, জিয়া হলের স্থানে একটি নান্দনিক স্থাপনা তৈরী করা আমাদের প্রথম লক্ষ্য এবং ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৩ জুন) নগর ভবনের শহিদ আলতাফ মিলনায়তনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সাথে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে এক সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় খুলনাকে আরো পরিকল্পিত পরিবেশবান্ধব বাসযোগ্য মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে গণমানুষের ন্যায়সঙ্গত কয়েকটি চাহিদা তুলে ধরা হয় এবং চাহিদাগুলি পূরণে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। চাহিদাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নগর এলাকা সম্প্রসারণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, যানজট নিরসন, নদীবেষ্টিত খুলনাকে ঘিরে শহর রক্ষা বাঁধ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি। এছাড়া জিয়া হলের স্থলে বহুমাত্রিক দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন নির্মাণ, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে মানসম্মত আরো নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বনায়ন, মেটারনিটি ক্লিনিকের পাশাপাশি নগর জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ, পার্কগুলির সংস্কার, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের বিষয়েও সভায় দাবি উত্থাপন করা হয়। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে ময়ূর নদ ও ২২টি খালসহ নগরীতে বিদ্যমান অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং ভৈরব, রূপসা ও পশুর নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিসহ বিদ্যমান পুকুরগুলি সংস্কারের ওপরও সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।
সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং তাদের দাবিসমূহের সাথে একমত পোষণ করে কেসিসি প্রশাসক বলেন, জিয়া হলের স্থানে একটি নান্দনিক স্থাপনা তৈরী করা আমাদের প্রথম লক্ষ্য এবং ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। যানজট নিরসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইজিবাইক চালকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে এবং ইজিবাইক চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। সফটওয়্যারের কার্যক্রম শুরু হলে কেউ আর একটি লাইসেন্স-এর বিপরীতে একাধিক ইজিবাইক চালাতে পারবে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জোয়ারের সময় অতি বৃষ্টি হলে কিছু কিছু স্থানে জলাবদ্ধতার কথা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, নগরীতে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং সুনির্দিস্ট কারণ উল্লেখ করে জরুরী ভিত্তিতে সমাধানের জন্য কেডিএ’কে পত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২২টি খাল ও নদীসমূহের নাব্যতা বৃদ্ধির বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কেসিসি প্রশাসক আরও বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। আর নতুন দেশ গড়তে প্রয়োজন সুশিক্ষিত তরুণ সমাজ। আগামী প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আমাদের মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু সংখ্যায় কম। মানসম্মত নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্য ঠিক করে সকলকে সাথে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি কেসিসি’র সকল কাজে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান, কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট কোহিনুর জাহান, খুলনা প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা মারুফ রশীদ, কালেক্টর অব ট্যাক্সেস মো: আব্দুল মাজেদ মোল্যা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এসকেএম তাছাদুজ্জামান, এস্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার মো: মনিরুজ্জামান রহিম, লাইসেন্স অফিসার খান হাবিবুর রহমান, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান, সিনিয়র সহসভাপতি মো: নিজাম উর রহমান লালু, সহসভাপতি মিনা আজিজুর রহমান, মো: খলিলুর রহমান, রেহেনা আখতার, অধ্যাপক আবুল বাসার ও অধ্যাপক মো: আজম খান, মহাসচিব এ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, যুগ্ম মহাসচিব সরদার রবিউল ইসলাম ও সৈয়দ এনামুল হাসান, সহ সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুল ইসলাম সহ কেসিসি’র কর্মকর্তা, সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে কেসিসি’র প্রশাসক বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে নগরীর ৩১নং ওয়ার্ড এলাকায় পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতাসমূহ ও কেসিসি’র গৃহীত কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
https://slotbet.online/